বাংলা- লেকচার – ১ (বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, যুগবিভাগ ও প্রাচীন যুগ)
Category: Bangla
Posted on: Tuesday, September 12, 2017
বাংলা ভাষা এবং লিপি • বাংলার আদি অধিবাসীদের ভাষা ছিল অস্ট্রিক এবং আর্যদের ভাষার নাম ছিল প্রাচীন বৈদিক ভাষা। • অধিকাংশের মতে, খ্রিস্টীয় দশম শতাব্দীতে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়। • তবে, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে,খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়। • সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, মাগধী প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উদ্ভব এবং ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, গৌড়ী প্রাকৃত ভাষা থেকে বাংলা ভাষার উদ্ভব। • দশম থেকে চতুর্দশ শতাব্দীকে বাংলা ভাষার আদিস্তরের স্থিতিকাল ধরা হয়। • বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। • ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর মোট শাখা দুইটি। যথা- কেন্তম এবং শতম। • ভারতীয় লিপিমালা মোট দুইটি। যথা- ব্রাক্ষী লিপি এবং খরোষ্ঠী লিপি। • ব্রাক্ষী লিপি হতে বাংলা লিপি এবং বর্ণমালার উদ্ভব হয়।
বাংলা সাহিত্যের যুগ বাংলা সাহিত্যের যুগ বিভাগ মোট তিনটি ভাগে বিভক্ত- ১. আদিযুগ (৬৫০-১২০০ খ্রী:) ২. মধ্যযুগ (১২০১-১৮০০ খ্রী:) ৩. আধুনিক যুগ (১৮০১ খ্রী: -বর্তমান)
১. প্রাচীন যুগঃ (৬৫০/৯৫০ - ১২০০ খ্রী) ড:মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগে (৬৫০-১২০০ খ্রীঃ / সপ্তম শতাব্দী থেকে দ্বাদশ শতাব্দী) প্রায় ৫৫০ বছর ড: সুনীতিকুমার চট্রোপধ্যায়ের মতে বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ (৯৫০-১২০০ খ্রীঃ / দশম শতাব্দী থেকে দ্বাদশ শতাব্দী) প্রায় ২৫০ বছর। প্রাচীন যুগের একমাত্র সাহিত্যের নিদর্শন - চর্যাপদ।
চর্যাপদঃ • বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য/কাবিতা সংকলন চর্যাপদ (বাংলা সাহিত্যর একমাত্র আদি নিদর্শন)। • এটি বাংলা সাহিত্যের আদিযুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন। • ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ দরবারের গ্রন্থাগার হতে ১৯০৭ সালে 'চর্যাচর্য বিনিশ্চয়' নামক পুথিটি আবিষ্কার করেন। • চর্যাপদের সাথে 'ডাকার্ণব' এবং 'দোহাকোষ' নামে আরো দুটি বই নেপালের রাজ দরবারের গ্রন্থাগার হতে আবিষ্কৃত হয়। ১৯১৬ সালে সবগুলো বই একসাথে 'হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বেৌদ্ধগান এবং দোহা' নামে প্রকাশ করেন। • ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় তার 'বাঙলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ' নামক গ্রন্থে ধ্বনি তত্ত্ব ব্যাকরণ ও ছন্দ বিচার করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন যে, পদসংকলনটি আদি বাংলা ভাষায় রচিত। • এতে মোট ৫১টি পদ রয়েছে। তবে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, চর্যাপদে মোট ৫০টি পদ রয়েছে। কয়েক পাতা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সর্বমোট সাড়ে ৪৬টি পদ পাওয়া গেছে। ২৩নং পদটি খন্ডিত আকারে উদ্ধার করা হয়েছে। ২৪, ২৫ এবং ৪৮ নং পদগুলো পাওয়া যায়নি। • চর্যাপদের মোট পদকর্তা ২৪ জন। তার মধ্যে লাড়ীডোম্বীপার কোন পদ পাওয়া যায়নি। • অনেকের মতে, চর্যাপদের আদিকবি লুইপা। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, প্রাচীনতম চর্যাকার শবরপা এবং আধুনিকতম চর্যাকার সরহ বা ভুসুকুপা। • কাহ্নপা সর্বাধিক ১৩টি পদ রচনা করেন। • শবরপাকে চর্যাপদের বাঙালি কবি মনে করা হয়। • চর্যাপদ মাত্রাবিত্ত ছন্দে রচিত। • চর্যাপদ মানে আচরণ / সাধনা • চর্যাপদ হচ্ছে কবিতা / গানের সংকলন • চর্যাপদ হচ্ছে বৌদ্ধ সহজিয়া ধর্মের সাধনতত্ব • চর্যাপদ পাল ও সেন আমলে রচিত
চর্যাপদ রচনার প্রেক্ষাপটঃ • ১৮৮২ সালে রাজা রাজেন্দ্র্লালমিত্র কিছু পুঁথি সাহিত্যের পরিচয় দিয়ে • The Sanskrit Buddhist Literature in Nepal • এই গ্রন্থটি পাঠ করে সবচেয়ে বেশী উৎসাহিত হন যার উপাধি মহামহোপাধ্যায় • যিনি পরবর্তী কালে ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান • তিনি ১৯০৭ সালে ২য় বারের মত নেপাল গমন করেন • নেপালের রয়েল লাইব্রেরী থেকে একসঙ্গে ৪ টি গ্রন্থ আবিষ্কার করেন।এর একটি হচ্ছে চর্যাপদ • বাকী ৩ টি হচ্ছে অপভ্রংশ ভাষায় রচিত- ১. সরহপদের দোহা, ২. কৃষ্ণপদের দোহা ও ৩. ডাকার্ণব • উল্লেখিত ৪ টি গ্রন্থ একসঙ্গে কলিকাতার বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে প্রকাশিত হয় • ১৯১৬ সালে তখন চারটি গ্রন্থের একসংগের নাম দেওয়া হয় হাজার বছরের পুরোনো বাঙ্গালা ভাষার বৌদ্ধ গান ও দোহা • এটি প্রকাশিত হবার পর পালি সংস্কৃত সহ বিভিন্ন ভাষাবিদ রা চর্যাপদকে নিজ নিজ ভাষার আদি নিদর্শন বলে দাবী করেন। • এসব দাবী মিথ্যা প্রমাণ করেন ড. সুনীতি কুমার চট্রোপাধ্যায় • ১৯২৬ সালে The Origin and Development of Bengali Language গ্রন্থে চর্যাপদ এর ভাষা বিষয়ক গবেষণা করেন এবং প্রমাণ করেন চর্যাপদ বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন। • ১৯২৭ সালে শ্রেষ্ঠ ভাষা বিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ চর্যাপদের ধর্মতত্ব বিষয়ক গবেষণা করেন এবং প্রমাণ করেন যে চর্যাপদ বাংলাসাহিত্যের আদি নিদর্শন।
চর্যাপদের নামকরণঃ ১. আশ্চর্যচর্যচয় ২. চর্যাচর্যাবিনিশ্চয় ৩. চর্যাশ্চর্যবিনিশ্চয় ৪. চর্যাগীতিকোষ ৫. চর্যাগীতি
চর্যাপদের পদসংখ্যাঃ মোট ৫১ টি পদ ছিল। ৪৬টি পূর্ণ পদ আবিষ্কৃত হয়। আবিষ্কারের সময় উপরের পৃষ্ঠা ছেঁড়া থাকার কারনে সবগুলো পদ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এবং পরে একটি পদের অংশবিশেষ সহ মোট সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ আবিষ্কৃত হয়।
চর্যাপদে কবির সংখ্যাঃ চর্যাপদে মোট ২৪জন কবি পাওয়া যায় ১ জন কবির পদ পাওয়া যায়নি তার নাম - তন্ত্রীপা / তেনতরীপা সেই হিসেবে পদ প্রাপ্ত কবির মোট সংখ্যা ২৩ জন
উল্লেখযোগ্যকবি ১. লুইপা ২. কাহ্নপা ৩. ভুসুকপা ৪. সরহপা ৫. শবরীপা ৬. লাড়ীডোম্বীপা ৭. বিরূপা ৮. কুম্বলাম্বরপা ৯. ঢেন্ডনপা ১০. কুক্কুরীপা ১১. কঙ্ককপা
কবিদের নাম শেষে পা দেওয়ার কারণঃ পদ > পাদ > পা পাদ > পদ > পা পদ রচনা করেন যিনি তাদেরকে পদকর্তা বলা হত যার অর্থ সিদ্ধাচার্য / সাধক [এরা বৌদ্ধ সহজিয়া ধর্মের সাধক ছিলেন]
২ টি কারণে নাম শেষে পা দেওয়া হতঃ ১. পদ রচনা করতেন ২. সম্মান / গৌরবসূচক কারনে
লুইপাঃ চর্যাপদের আদিকবি, রচিত পদের সংখ্যা ২ টি
কাহ্নপাঃ কাহ্নপার রচিত মোট পদের সংখ্যা ১৩ টি -তিনি সবচেয়ে বেশী পদ রচয়ীতা। উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ১২ টি । তার রচিত ২৪ নং পদটি পাওয়া যায়নি
ভুসুকপাঃ পদসংখ্যার রচনার দিক দিয়ে ২য় । রচিত পদের সংখ্যা ৮টি। তিনি নিজেকে বাঙ্গালী কবি বলে দাবী করেছেন। তার বিখ্যাত কাব্যঃ অপনা মাংসে হরিণা বৈরী অর্থ - হরিণ নিজেই নিজের শত্রু
সরহপাঃ রচিত পদের সংখ্যা ৪ টি।
শবরীপাঃ ১. রচিত পদের সংখ্যা ২ টি। গবেষকগণ তাকে বাঙ্গালী কবি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বাংলার অঞ্চলে ভাগীরথী নদীর তীরে বসবাস করতেন বলে ধারণা করা হয়। যদি তিনি ভাগীরথী নদীর তীরে বসবাস না করতেন তাহলে বাঙ্গালী কবি হবেন না।
কুক্কুরীপাঃ রচিত পদের সংখ্যা ২ টি। তার রচনায় মেয়েলী ভাব থাকার কারণে গবেষকগণ তাকে মহিলা কবি হিসেবে সনাক্ত করেন।
তন্ত্রীপাঃ উনার রচিত পদটি পাওয়া যায় নি। উনার রচিত পদটি ২৫ নং পদ।
ঢেন্ডনপাঃ চর্যাপদে আছে যে বেদে দলের কথা, ঘাঁটের কথা, মাদল বাজিয়ে বিয়ে করতে যাবার উৎসব, নব বধুর নাকের নথ ও কানের দুল চোরের চুরি করার কথা সর্বোপরি ভাতের অভাবের কথা ঢেন্ডনপা রচিত পদে তৎকালীন সমাজপদ রচিত হয়েছে। তিনি পেশায় তাঁতি ছিলেন । টালত মোর ঘর নাই পড়বেশী হাঁড়িতে ভাত নাই নিতি আবেশী [আবেশী কথাটার ২টি অর্থ রয়েছে: ক্ল্যাসিক অর্থে - উপোস এবং রোমান্টিক অর্থে - বন্ধু]
চর্যাপদের ভাষাঃ চর্যাপদ প্রাচীন বাংলা ভাষায় রচিত- এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। কতিপয় গবেষক চর্যাপদের ভাষা প্রাচীন বাঙ্গালা মেনে নিয়েই এ ভাষাকে সান্ধ্য ভাষা / সন্ধ্যা ভাষা / আলো আঁধারের ভাষা বলেছেন। অধিকাংশ ছন্দাসিক একমত - চর্যাপদ মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত।
প্রাচীন যুগের সাহিত্যের একমাত্র বৈশিষ্ট্য ছিল - ব্যাক্তি মধ্য যুগের সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল - ধর্ম আধুনিক যুগে সাহিত্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল - মানবিকতা / মানবতাবাদ / মানুষ সবচেয়ে বেশী সমৃদ্ধ / সমাদৃত - ১. কাব্য (গীতিকাব্য), ২. উপন্যাস, ৩. ছোটগল্প
কাজখুঁজি ডট কম এ রেজিষ্ট্রেশন করুন
কাজখুঁজি ডট কম এ রেজিষ্ট্রেশন করলে আপনি এর সকল ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। এটি সম্পূর্ন ফ্রি!
Join as Candidate
ক্যান্ডিডেট হিসেবে জয়েন করে যা যা করতে পারবেন:
১. আপনার সিভি/রিজিউম আপডেট করতে পারবেন এবং অনলাইনের জব পোষ্টিংগুলিতে আবেদন করতে পারবেন।
Join as Candidate > From Candidate Menu: goto Resume & Jobs > Edit resume
২. আপনার পাবলিক প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন । এখান থেকে যে কেউ আপনাকে সহজে খুঁজে পাবে এবং আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে
Join as candidate > goto your candidate dashboard > Create your public profile
From your candidate dashboard edit your public profile and you are done.
Click here to access public profiles
Featured Articles
Resume Structure for Government Jobs
Resume/CV
আইবিএ এবং কিকি বই পড়তে হবে: আইবিএর ডিগ্রী যদি হয় আপনার স্বপ্ন, তাহলে প্রস্তুতি শুরু করুন এখনই
Career Guide
জেনেনিন কি বোর্ড এর F1 থেকে F12 পর্যন্ত বাটন গুলোর কাজ
Computer and IT
বিভিন্ন শাস্ত্রের জনক (Father of Various Subjects)
International
ব্যাংক ভাইভা টার্ম (Bank viva Terms)
Bank
সরকারী চাকুরিতে আবেদনের বিভিন্ন নমুনা ফরম
Resume/CV
BCS Cadre Choice-বিসিএস পরীক্ষায় ক্যাডার চয়েসঃ সুজন দেবনাথের জানালায়
BCS