কেন পড়া মনে থাকে না ও কিভাবে পড়া মনে রাখবেন
Category: General
Posted on: Sunday, September 17, 2017
পাঠ্যবইয়ে পড়া অধীত বস্তগুলি যে আমরা মনে রাখতে পারি না তার প্রধান কারণ:
১। এগুলো পড়ে পরীক্ষা পাস ছাড়া জীবনে আর কোনো কাজে লাগবে কিনা সে সম্পর্কে আমাদের সম্যক ধারণা নেই। তাই মনে করি কোনো রকমে পরীক্ষায় পাশটা করে গেলে যথেষ্ট। সারাজীবন ধরে এটা মনে রাখার দরকার নেই। আসলে সবাই ভাবে লেখাপড়া, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়েই শেষ হয়ে যায়। ডিগ্রির জন্যই পড়াশোনা। ডিগ্রি পেয়ে গেলে ওটারই দাম, পড়াশোনার আর দাম নেই। এই কারণে কলেজের পাঠ্যবই-এর পড়া লোকে পরবর্তীকালে ভুলে যায়। কারণ ভুলে যেতে চায় বলেই ভুলে যায়।
২। কলেজে পড়াশোনার পদ্ধতিও নীরস ও ক্রটিপূর্ণ। আমি কলেজে পড়েছি। ইন্টারমিডিয়েটে ক্লাস একশোর বেশি ছাত্র নিয়ে। কোন মাইক ব্যবহার করা হত না। পিছনের ছাত্ররা কিছুই শুনতে পেত না। তার ফলে অনেক ছাত্র ক্লাস পালাত। আমিও ক্লাস পালাতাম। ক্লাসে কি পড়ানো হত আমি আজও একটা লাইনও বলতে পারব না। পরীক্ষার ঠিক আগে মনে হত গোটা বইটার একটা প্রশ্নও আমি শিখিনি। কী ধরনের প্রশ্ন আসবে তাও জানি না। অথচ আগামী কালই পরীক্ষা।
কলেজে শিক্ষার এই পরিবেশ অধিকাংশ কলেজে আজও অব্যাহত রয়েছে। বহু ছাত্র-ছাত্রীকে জিজ্ঞাসা করে দেখেছি তারা সিলেবাসটা পর্যন্ত জানে না। অনেক জায়গায় কলেজে ক্লাসেই হয় না। কারণ ছাত্র-ছাত্রীরাই যায় না। এই সময়টা কোনো কোনো শিক্ষক বাড়িতে কোচিং ক্লাস করান। ক্লাসে ঠিকমতো পড়াশোনা হচ্ছে তখনই বলব যখন ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে একটা বোঝাপড়ার (understanding) সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। শিক্ষক জানছেন কোন ছাত্রের দুর্বলতা কোথায় ও তাকে সেইমতো বোঝাচ্ছেন। তাছাড়া তিনি কোর্স শেষ করে, আবার রিপিটেশন করছেন।
পড়তে হয় বার বার
রিপিটেশন বা বার-বার পড়া মনে রাখার প্রকৃষ্ট পদ্ধতি। ছাত্র-ছাত্রীদের বলি যা পড়বার প্রথম তিনমাসই একবারে শেষ করে ফেলুন। পরের ন মাস ধরে চলুক রিপিটেশন। এমন কোন ওষুধ নেই একবার খেলেই রোগ উপশম হয়। মনে রাখতে গেলে বার বার সেটা পড়তে হয়। বিজ্ঞাপনের ছাত্র-ছাত্রীদের আমরা শেখাই Repetition and domination. একটা বিজ্ঞাপন বার-বার repeat করো। আরও বড় করে বিজ্ঞাপন দাও।
বাস্তব জগতে কোনো ক্রিয়া রিপিটেশন ছাড়া হয় না। না কাঁদলে মা শিশুকে স্তন্য দান করে না। কিন্তু শিশুর একবার কাঁদলেই চলে না। প্রতিবার কাঁদতে হয়। তেমনি কারো বার বার ঘ্যান ঘ্যান করতে হয়। এই জন্যই একটা বিজ্ঞাপন বার বার দিতে হয়। নাটকে রিহার্সালও দিতে হয় বার বার। তেমনি একটা সাবজেক্ট বুঝতে গেলে বা জানতে গেলে বার বার করে পড়তে হয়। একে বলে অনুশীলন টাইপ, কম্পিউটার, সাঁতার শেখার লেসন একটাই : 'বার বার করো'।
কিন্তু বার বার পড়লেই হবে না। এমন কি বার বার পড়লে মুখস্থ হয়তে হয়েতে হয়ে যাবে, কিন্তু বেশিদিন তা মনে রাখা যাবে না । বেশিদিন মনে রাখতে গেলে জিনিসটি বুঝে মুখস্থ করতে হবে। সেই সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে তোতাপাখির মতো না বুঝে মুখস্থ করাকে rote learning বলে। এইরকম মুখস্ত কাম্য নয়। মুখস্ত করার আগে সমস্ত শব্দের অর্থ জানতে হবে ও ভাবার্থ জানতে হবে। এজন্য বলি পড়ে বোঝা ও বুঝে পড়া। মনোযোগ অর্জন করার কতগুলি শর্ত আছে। মনকে ধ্যান ও যোগের দ্বারা ক্রমশ একমুখী করে তুলতে হয়।
একটু নির্জনতার সন্ধানে
পড়ার জন্য একটি নির্জন ঘর বেছে নেওয়া বাঞ্জনীয়। পড়ার ঘরে অনেক ফিল্মি হিরো, হিরোইন বা ক্রিকেট ছবি রাখে। এটি অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই সব ছবি মনের একাগ্রতা নষ্ট করে। পড়ার ঘরে বরং আপনার নিজের ছবি বড় করে বাঁধিয়ে রেখে দিন। প্রতিদিন পড়া শুরুর আগে ছবির দিকে তাকিয়ে বলুন, আমাকে সমস্ত বিঘ্ন অতিক্রম করতে হবে। আমাকে মনোযোগী হতে হবে। আমাকে বড় হতে হবে। আমাকে পরীক্ষায় সফল হতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। আর আমাকে সকল বাঁধা অতিক্রম করতে গেলে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এখানে ফাঁকির কোনো স্থান নেই। এবার আর একটা কাগজে লিখুন-পড়াশোনা আমার দ্বারা হবে না। আমি বেকার থাকব। চেষ্টা না করে খাব দাবো আর ফুর্তি করে বেড়াব। তারপর কাগজটি টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিন।
পরীক্ষার আগে পড়া
আমাদের ক্লাসে ফাস্ট বয় সারাদিন আড্ডা দিয়ে সারারাত ধরে পড়ত। শুনেছি ভালো ছেলেরা নাকি তাই করে। আমাদের দেশের বাড়ি পাশের বাড়ির একটি স্কুলের ছেলে চার-পাঁচ ঘন্টা চেঁচিয়ে পড়ত। কিন্তু সে ক্লাসে ফেল করত। কতক্ষণ পড়ব, কখন পড়ব, এব্যাপারে কোনো ফর্মূলা দেওয়া যাবে না। খাদ্যের ব্যাপারে যেমন আমরা বলতে পারি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দিনে ১৬ আউন্স খাদ্য বা ২৫০০ ক্যাসরি খাদ্য লাগে। কিন্তু অনেকে ১২০০ ক্যালরি খেয়েও স্বাস্থ্যবান থাকতে পারে।
পড়ার ব্যাপারেও তাই। আসলে দেখতে হয় যতটুকু পড়ছি মনে রাখতে পারছি কিনা। আজকাল একদিন থেকে এক সপ্তাহ কোনো বিষয়ের ওপর টানা ওয়ার্কশপ চলে। তাতে সারাজীবনে যা শেখেননি তা নাকি ক্যাপসুল করে একদিনে টানা ঘন্টায় শিখিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু J.C. Jenkins ও Dallenbach দেখিয়েছেন দু'দল বাচ্চাকে ননসেন্স ছাড়া শেখানো হল। আর একদলকে না ঘুমাতে দিয়ে টানা শিখিয়ে যাওয়া হল।
দেখা গেল যাদের ঘুমোতে দেওয়া হয়েছিল তাদের স্মতিধারণ ক্ষমতা অবিরাম শিক্ষার্থীদের তুলনায় ভালো হয়েছে। অনেকে টানা অনেক্ষণ পড়তে পারে ও মনেও রাখতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, এক ঘন্টা একনাগাড়ে পড়ার পর দশ মিনিট বিশ্রাম দরকার। এই বিশ্রামের সময় কিন্তু টিভি দেখতে যাবেন না। তাহলে যা পড়েছেন সেটা ইরেজ হয়ে যাবে মন থেকে। যেমন টেপ রেকর্ডারে প্রিরেকর্ডেড টেপের ওপর রেকর্ড করলে আগেরটা ইরেজ হয়ে যায়। তার চেয়ে শবাসনে শুয়ে থাকুন। অথবা একটু আড্ডা দিয়ে আসুন। একটু হেঁটে নিন। তারপর আবার শুরু করুন। দিন-রাত একটানা পড়লে স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ে। হজম হয় না। রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। অনেকে ঘুম তাড়াবার জন্য ওষুধ খায়, চা, কফি খায়। এর ফলে সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
কাজখুঁজি ডট কম এ রেজিষ্ট্রেশন করুন
কাজখুঁজি ডট কম এ রেজিষ্ট্রেশন করলে আপনি এর সকল ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। এটি সম্পূর্ন ফ্রি!
Join as Candidate
ক্যান্ডিডেট হিসেবে জয়েন করে যা যা করতে পারবেন:
১. আপনার সিভি/রিজিউম আপডেট করতে পারবেন এবং অনলাইনের জব পোষ্টিংগুলিতে আবেদন করতে পারবেন।
Join as Candidate > From Candidate Menu: goto Resume & Jobs > Edit resume
২. আপনার পাবলিক প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন । এখান থেকে যে কেউ আপনাকে সহজে খুঁজে পাবে এবং আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে
Join as candidate > goto your candidate dashboard > Create your public profile
From your candidate dashboard edit your public profile and you are done.
Click here to access public profiles
Featured Articles
Resume Structure for Government Jobs
Resume/CV
আইবিএ এবং কিকি বই পড়তে হবে: আইবিএর ডিগ্রী যদি হয় আপনার স্বপ্ন, তাহলে প্রস্তুতি শুরু করুন এখনই
Career Guide
জেনেনিন কি বোর্ড এর F1 থেকে F12 পর্যন্ত বাটন গুলোর কাজ
Computer and IT
বিভিন্ন শাস্ত্রের জনক (Father of Various Subjects)
International
ব্যাংক ভাইভা টার্ম (Bank viva Terms)
Bank
সরকারী চাকুরিতে আবেদনের বিভিন্ন নমুনা ফরম
Resume/CV
BCS Cadre Choice-বিসিএস পরীক্ষায় ক্যাডার চয়েসঃ সুজন দেবনাথের জানালায়
BCS